সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় প্রযুক্তি পণ্যের নাম স্মার্টফোন। নিয়মিতই এই
স্মার্টফোনে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তি, নতুন নতুন ফিচার। ফলে
কল্পনার অনেক কাছাকাছি চলে আসছে এই স্মার্টফোন। চলতি বছরেও এসব
স্মার্টফোনের জন্য নতুন বেশকিছু চমক অপেক্ষা করছে। স্মার্টফোনপ্রেমীদের
জন্য এমন কিছু চমকের খবর জানাচ্ছেন মোজাহেদুল ইসলাম
সময়ের
জনপ্রিয়তম প্রযুক্তি পণ্য বলা যায় স্মার্টফোনকে। আইফোন দিয়ে আধুনিক
স্মার্টফোনের যাত্রা শুরু হলেও তাতে একচ্ছত্র আধিপত্য বলতে গেলে কারও নেই।
অপারেটিং সিস্টেমে অ্যান্ড্রয়েড বাজারের সিংহভাগ দখল করে রাখলেও ডিভাইস
নির্মাতাদের তালিকাটা বেশ লম্বা। একেকটি স্মার্টফোন নির্মাতা তাদের নিজ
নিজ স্মার্টফোনগুলোতে যুক্ত করে যাচ্ছে নিজেদের মতো করে নতুন নতুন
ফিচার। তাতে করে স্মার্টফোন তার কাজের দক্ষতা ও বৈচিত্র্যে পরিণত হচ্ছে
হাতের মুঠোর কম্পিউটারে। ইতোমধ্যেই আইফোন ৫এস-এর কল্যাণে ৬৪-বিটে প্রবেশ
করেছে স্মার্টফোন। ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিকিউরিটি, বাঁকানো ডিসপ্লের মতো
অভিনব স্মার্টফোন ফিচারও দেখেছে প্রযুক্তি। আগামী দিনগুলোতে এমন আরও সব
চমক অপেক্ষা করছে স্মার্টফোনপ্রেমীদের জন্য। যেসব হার্ডওয়্যার বা ফিচার
স্মার্টফোনে চমক নিয়ে আসতে ভূমিকা রাখবে এ বছরে, তারই কয়েকটির কথা তুলে
ধরা হলো এই লেখায়।
স্যামসাং আইসোসেল ক্যামেরা সেন্সর
স্মার্টফোনের
ব্যবহার যে কয়েকটি কাজে সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে অন্যতম ছবি তোলা। যে
কারণে স্মার্টফোনে এখন যুক্ত হচ্ছে উচ্চ রেজ্যুলেশনের ক্যামেরা এবং উন্নত
সেন্সর। স্মার্টফোনে ছবি তোলার অভিজ্ঞতাকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলতে
স্যামসাং সি-মস ইমেজ সেন্সরের জন্য নতুন অ্যাডভান্সড পিক্সেল প্রযুক্তি
উদ্ভাবনের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে 'আইসোসেল'। স্যামসাং
জানিয়েছে, এই সেন্সরের আলোক সংবেদনশীলতা প্রচলিত সেন্সরের চাইতে অনেক
বেশি। এ ছাড়া ইলেকট্রন শোষণের হার প্রায় ৩০% পর্যন্ত বেশি নিয়ন্ত্রণযোগ্য
হওয়ায় কম আলোতেও ভালো ছবি তুলবে এটি। স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি এস এবং
গ্যালাক্সি নোট সিরিজের পরবর্তী ফোনগুলোতে এই প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটবে
বলে জানিয়েছে স্যামসাং।
মিডিয়া টেক অক্টা-কোর প্রসেসর
গেল
বছরেই স্যামসাং তাদের নিজেদের তৈরি অক্টা-কোর প্রসেসর প্রদর্শন করে তাক
লাগিয়ে দিয়েছে প্রযুক্তি বিশ্বকে। ধারণা করা হচ্ছে এ বছরে এসে অক্টা-কোর
প্রসেসর প্রবেশ করবে মূল ধারায়। ইতোমধ্যেই বেশকিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই
অক্টা-কোর প্রসেসরে নিজেদের আগ্রহের কথা জানিযেছে। তবে এ বছরে এসে এই
অক্টা-কোর প্রসেসরের বাজারে সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে মিডিয়াটেক।
চীনা এই চিপ নির্মাতা তাদের এই প্রসেসরকে বলেছে 'সত্যিকারের' অক্টাকোর
প্রসেসর। স্যামসাংয়ের আর্টকোরের এক্সিনস প্রসেসরে একাধারে চারটি পর্যন্ত
কোর কাজ করে। সেখানে মিডিয়াটেকের প্রসেসরে আটটি কোরই একসাথে কাজ করতে
সক্ষম। মিডিয়াটেকের প্রসেসর ব্যয়সাশ্রয়ী হওয়ায় হাই-অ্যান্ড অক্টাকোর
স্মার্টফোনও খানিকটা সুলভ হয়ে উঠবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।
হুয়াওয়ে ৬৪-বিট প্রসেসর
৮
কোরের প্রসেসরের মতো ৬৪-বিটের প্রসেসরও এ বছরে মূল ধারায় প্রবেশ করবে
বলে ধারণা প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের। আইফোন ৫এস ছাড়াও গ্যালাক্সি এস৫-এর দেখা
মিলবে বলে জানিয়েছে স্যামসাং। তবে এর বাইরে চীনের হুয়াওয়ে তাদের আগামী
স্মার্টফোনগুলোতে ৬৪-বিট প্রসেসর যুক্ত করবে বলে জানিয়েছে। এর জন্য দুইটি
ভিন্ন ভিন্ন মডেলের ৬৪-বিট প্রসেসর তৈরি করছে হুয়াওয়ে। উভয় প্রসেসরই
কোয়াড-কোরের। তবে এগুলোর একটি ভারি কাজ এবং অন্যটি হালকা ধরনের কাজের
উপযোগী। ৬৪-বিট প্রসেসরের এসব স্মার্টফোন বাজারে আসতে আসতে এর জন্য
প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশনগুলোও তৈরি হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এসটিমাইক্রোইলেকট্রনিক্সের ৯-অক্ষ সেন্সর
স্মার্টফোনের
কার্যকারিতা বাড়িয়ে তুলতে নানা ধরনের সেন্সরই ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষ
করে গতির সাথে সংবেদনশীল অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে সেন্সরের ব্যবহার খুব
গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের কাজকেই সূক্ষ্মভাবে সম্পন্ন করতে এমন
মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স তৈরি করছে ৯-অক্ষের একটি সেন্সর। নড়াচড়া শনাক্ত করার
সাথে সাথে নিখুঁত অবস্থানও স্থির করতে পারে এটি। এর জন্য এতে থাকছে
৩-অক্ষের একটি অ্যাকসেলারোমিটার, ৩-অক্ষের একটি গাইরোস্কোপ এবং ৩-অক্ষের
একটি ম্যাগনেটোমিটার। জেশ্চার কন্ট্রোল, নেভিগেশন, অগমেন্টেড রিয়েলিটি
প্রভৃতির জন্য অত্যন্ত কার্যকরী হবে সেন্সরটি। তবে কম্প্যাক্ট সেন্সরটি
শক্তি খরচ করবে তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
এলজি হাইরেজ্যুলেশন ডিসপ্লে
এইচডি'র
এযুগে প্রতিটি স্মার্টফোনেরই অন্যতম প্রধান ফিচার হিসেবে বিবেচনা করা হয়
ডিসপ্লেকে। যে কারণে টেলিভিশনও মনিটরের ডিসপ্লে ৪কে পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
স্মার্টফোনের ডিসপ্লেতেওে লেগেছে আল্ট্রা হাই-রেজ্যুলেশনের ছোঁয়া। এর
মধ্যে এলজি তাদের সাড়ে ৫ ইঞ্চি আকৃতির একটি ডিসপ্লেতে যুক্ত করেছে ২৫৬০ বাই
১৪৪০ পিক্সেল রেজ্যুলেশন, যার পিক্সেল ঘনত্ব ৫৩৮ পিপিআই। একে বলা হচ্ছে
কোয়াড এইচডি ডিসপ্লে। ৭২০ পিক্সের রেজ্যুলেশনের প্রায় চারগুণ এই ডিসপ্লে।
ফলে ঝকঝকে-তকতকে ছবি স্মার্টফোনে দেখতে চাইলে এলজি'র এই ডিসপ্লেতে
মনোযোগী হতে পারেন।
স্যামসাং ৪ গিগাবাইট মোবাইল র্যাম
এতদিন
পর্যন্ত স্মার্টফোনের র্যাম ২ গিগাবাইট পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। কেবল
গ্যালাক্সি নোট থ্রিতে ছিল ৩ গিগাবাইট র্যাম। তবে স্যামসাং এই
সীমাবদ্ধতাকে কাটিয়ে মোবাইল ডিভাইসের জন্য ৪ গিগাবাইট র্যাম তৈরি করেছে।
এটি এলপিডিডিআর৪ মোবাইল ডি-র্যাম। স্মার্টফোনের কাজকে গতিশীল করা,
অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে আরও মসৃণভাবে পরিচালনা করা কিংবা মাল্টিটাস্কিংয়ের
ক্ষেত্রে এই র্যাম নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করবে। তবে কাজের ক্ষেত্রে যোজন
যোজন এগিয়ে থাকলেও এতে শক্তি খরচ অনেক থাকবে বলে জানিয়েছে স্যামসাং।
কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮০৫
স্মার্টফোন
চিপ নির্মাতা হিসেবে কোয়ালকম প্রযুক্তি বিশ্বে একটি নির্ভরযোগ্য নাম।
তাদের নতুন চমক হিসেবে এ বছরেই বাজারে আসার কথা রয়েছে স্ন্যাপড্রাগন ৮০৫
প্রসেসরের। ক্রেইট ৪৫০ কোয়াড-কোর সিপিইউ-এর উপর তৈরি এই প্রসেসরের ক্লক
স্পিড প্রতিটি কোরে ২.৫ গিগাহার্জ। এই চিপে আরও রয়েছে অ্যাড্রেনো ৪২০
জিপিইউ। ফলে এর গ্রাফিক্স ক্ষমতা আগের প্রসেসরগুলোর তুলনায় ৪০ শতাংশ
পর্যন্ত বেশি হবে, যা ৪কে মানের কনটেন্টও সমর্থন করবে। ফলে হাই-এন্ড
স্মার্টফোন কম্পিউটিংয়ের জন্য স্ন্যাপড্রাগন ৮০৫ প্রসেসর হতে পারে
স্মার্টফোন নির্মাতাদের অন্যতম ভরসা।
এনভিডিও টেগরা কে১
গ্রাফিক্স
কার্ডের জন্য এনভিডিয়া বিখ্যাত হলেও মোবাইল প্রসেসরের বাজারে টেগরা সিরিজ
দিয়ে শক্তিশালী অবস্থানেই রয়েছে এনভিডিয়া। স্মার্টফোন প্রসেসরে এ বছরে
তাদের আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে টেগরা কে১ প্রসেসর। ৩২-বিট এবং ৬৪-বিট সংস্করণে
এই প্রসেসর তৈরি করছে এনভিডিয়া। এই প্রসেসরের ব্যবহার বিশেষ করে
স্মার্টফোন গেমিংয়ে দেবে নতুন গতি। এক্সবক্স ৩৬০ বা প্লে-স্টেশন ৩কেও
গতিতে ছাড়িয়ে যাবে এই চিপের স্মার্টফোন—এমনটিই জানিয়েছে এনভিডিয়া।
এলজি নমনীয় ব্যাটারি
নমনীয়
বা বাঁকানো স্মার্টফোন নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এর মধ্যে
বাঁকানো ডিসপ্লের স্মার্টফোন বাজারে এলেও নমনীয় স্মার্টফোনের দেখা
মেলেনি। আর এটি তৈরিতে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো নমনীয় ব্যাটারি না থাকা।
তবে নমনীয় এবং বাঁকানো একটি ব্যাটারি সফলভাবে তৈরির ঘোষণা দিয়েছে এলজি।
এলজি'র 'চেম' ইউনিট তৈরি করেছে এই ব্যাটারি যা যেকোনো ধরনের মোবাইল
ডিভাইস ব্যবহার করা যায়। এমনকি ওয়্যারেবল পিসির যে ধারণাগুলো নিয়ে কাজ
চলছে, সেগুলোতেও ব্যবহার করা যাবে এই ব্যাটারি। ফলে একে নিয়ে আশাবাদীই হয়ে
উঠেছে প্রযুক্তি বিশ্ব।
আশা করা হচ্ছে এই উদ্ভাবনগুলো হাজির হবে এ বছরেরই বিভিন্ন সময়ে। ফলে স্মার্টফোনপ্রেমীরা আগ্রহে অপেক্ষা করতে পারেন এ বছর।
স্মার্টফোনে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তি, নতুন নতুন ফিচার। ফলে
কল্পনার অনেক কাছাকাছি চলে আসছে এই স্মার্টফোন। চলতি বছরেও এসব
স্মার্টফোনের জন্য নতুন বেশকিছু চমক অপেক্ষা করছে। স্মার্টফোনপ্রেমীদের
জন্য এমন কিছু চমকের খবর জানাচ্ছেন মোজাহেদুল ইসলাম
সময়ের
জনপ্রিয়তম প্রযুক্তি পণ্য বলা যায় স্মার্টফোনকে। আইফোন দিয়ে আধুনিক
স্মার্টফোনের যাত্রা শুরু হলেও তাতে একচ্ছত্র আধিপত্য বলতে গেলে কারও নেই।
অপারেটিং সিস্টেমে অ্যান্ড্রয়েড বাজারের সিংহভাগ দখল করে রাখলেও ডিভাইস
নির্মাতাদের তালিকাটা বেশ লম্বা। একেকটি স্মার্টফোন নির্মাতা তাদের নিজ
নিজ স্মার্টফোনগুলোতে যুক্ত করে যাচ্ছে নিজেদের মতো করে নতুন নতুন
ফিচার। তাতে করে স্মার্টফোন তার কাজের দক্ষতা ও বৈচিত্র্যে পরিণত হচ্ছে
হাতের মুঠোর কম্পিউটারে। ইতোমধ্যেই আইফোন ৫এস-এর কল্যাণে ৬৪-বিটে প্রবেশ
করেছে স্মার্টফোন। ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিকিউরিটি, বাঁকানো ডিসপ্লের মতো
অভিনব স্মার্টফোন ফিচারও দেখেছে প্রযুক্তি। আগামী দিনগুলোতে এমন আরও সব
চমক অপেক্ষা করছে স্মার্টফোনপ্রেমীদের জন্য। যেসব হার্ডওয়্যার বা ফিচার
স্মার্টফোনে চমক নিয়ে আসতে ভূমিকা রাখবে এ বছরে, তারই কয়েকটির কথা তুলে
ধরা হলো এই লেখায়।
স্যামসাং আইসোসেল ক্যামেরা সেন্সর
স্মার্টফোনের
ব্যবহার যে কয়েকটি কাজে সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে অন্যতম ছবি তোলা। যে
কারণে স্মার্টফোনে এখন যুক্ত হচ্ছে উচ্চ রেজ্যুলেশনের ক্যামেরা এবং উন্নত
সেন্সর। স্মার্টফোনে ছবি তোলার অভিজ্ঞতাকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলতে
স্যামসাং সি-মস ইমেজ সেন্সরের জন্য নতুন অ্যাডভান্সড পিক্সেল প্রযুক্তি
উদ্ভাবনের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে 'আইসোসেল'। স্যামসাং
জানিয়েছে, এই সেন্সরের আলোক সংবেদনশীলতা প্রচলিত সেন্সরের চাইতে অনেক
বেশি। এ ছাড়া ইলেকট্রন শোষণের হার প্রায় ৩০% পর্যন্ত বেশি নিয়ন্ত্রণযোগ্য
হওয়ায় কম আলোতেও ভালো ছবি তুলবে এটি। স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি এস এবং
গ্যালাক্সি নোট সিরিজের পরবর্তী ফোনগুলোতে এই প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটবে
বলে জানিয়েছে স্যামসাং।
মিডিয়া টেক অক্টা-কোর প্রসেসর
গেল
বছরেই স্যামসাং তাদের নিজেদের তৈরি অক্টা-কোর প্রসেসর প্রদর্শন করে তাক
লাগিয়ে দিয়েছে প্রযুক্তি বিশ্বকে। ধারণা করা হচ্ছে এ বছরে এসে অক্টা-কোর
প্রসেসর প্রবেশ করবে মূল ধারায়। ইতোমধ্যেই বেশকিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানই
অক্টা-কোর প্রসেসরে নিজেদের আগ্রহের কথা জানিযেছে। তবে এ বছরে এসে এই
অক্টা-কোর প্রসেসরের বাজারে সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে মিডিয়াটেক।
চীনা এই চিপ নির্মাতা তাদের এই প্রসেসরকে বলেছে 'সত্যিকারের' অক্টাকোর
প্রসেসর। স্যামসাংয়ের আর্টকোরের এক্সিনস প্রসেসরে একাধারে চারটি পর্যন্ত
কোর কাজ করে। সেখানে মিডিয়াটেকের প্রসেসরে আটটি কোরই একসাথে কাজ করতে
সক্ষম। মিডিয়াটেকের প্রসেসর ব্যয়সাশ্রয়ী হওয়ায় হাই-অ্যান্ড অক্টাকোর
স্মার্টফোনও খানিকটা সুলভ হয়ে উঠবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।
হুয়াওয়ে ৬৪-বিট প্রসেসর
৮
কোরের প্রসেসরের মতো ৬৪-বিটের প্রসেসরও এ বছরে মূল ধারায় প্রবেশ করবে
বলে ধারণা প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের। আইফোন ৫এস ছাড়াও গ্যালাক্সি এস৫-এর দেখা
মিলবে বলে জানিয়েছে স্যামসাং। তবে এর বাইরে চীনের হুয়াওয়ে তাদের আগামী
স্মার্টফোনগুলোতে ৬৪-বিট প্রসেসর যুক্ত করবে বলে জানিয়েছে। এর জন্য দুইটি
ভিন্ন ভিন্ন মডেলের ৬৪-বিট প্রসেসর তৈরি করছে হুয়াওয়ে। উভয় প্রসেসরই
কোয়াড-কোরের। তবে এগুলোর একটি ভারি কাজ এবং অন্যটি হালকা ধরনের কাজের
উপযোগী। ৬৪-বিট প্রসেসরের এসব স্মার্টফোন বাজারে আসতে আসতে এর জন্য
প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশনগুলোও তৈরি হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এসটিমাইক্রোইলেকট্রনিক্সের ৯-অক্ষ সেন্সর
স্মার্টফোনের
কার্যকারিতা বাড়িয়ে তুলতে নানা ধরনের সেন্সরই ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশেষ
করে গতির সাথে সংবেদনশীল অ্যাপ্লিকেশনগুলোতে সেন্সরের ব্যবহার খুব
গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরনের কাজকেই সূক্ষ্মভাবে সম্পন্ন করতে এমন
মাইক্রোইলেক্ট্রনিক্স তৈরি করছে ৯-অক্ষের একটি সেন্সর। নড়াচড়া শনাক্ত করার
সাথে সাথে নিখুঁত অবস্থানও স্থির করতে পারে এটি। এর জন্য এতে থাকছে
৩-অক্ষের একটি অ্যাকসেলারোমিটার, ৩-অক্ষের একটি গাইরোস্কোপ এবং ৩-অক্ষের
একটি ম্যাগনেটোমিটার। জেশ্চার কন্ট্রোল, নেভিগেশন, অগমেন্টেড রিয়েলিটি
প্রভৃতির জন্য অত্যন্ত কার্যকরী হবে সেন্সরটি। তবে কম্প্যাক্ট সেন্সরটি
শক্তি খরচ করবে তুলনামূলকভাবে অনেক কম।
এলজি হাইরেজ্যুলেশন ডিসপ্লে
এইচডি'র
এযুগে প্রতিটি স্মার্টফোনেরই অন্যতম প্রধান ফিচার হিসেবে বিবেচনা করা হয়
ডিসপ্লেকে। যে কারণে টেলিভিশনও মনিটরের ডিসপ্লে ৪কে পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।
স্মার্টফোনের ডিসপ্লেতেওে লেগেছে আল্ট্রা হাই-রেজ্যুলেশনের ছোঁয়া। এর
মধ্যে এলজি তাদের সাড়ে ৫ ইঞ্চি আকৃতির একটি ডিসপ্লেতে যুক্ত করেছে ২৫৬০ বাই
১৪৪০ পিক্সেল রেজ্যুলেশন, যার পিক্সেল ঘনত্ব ৫৩৮ পিপিআই। একে বলা হচ্ছে
কোয়াড এইচডি ডিসপ্লে। ৭২০ পিক্সের রেজ্যুলেশনের প্রায় চারগুণ এই ডিসপ্লে।
ফলে ঝকঝকে-তকতকে ছবি স্মার্টফোনে দেখতে চাইলে এলজি'র এই ডিসপ্লেতে
মনোযোগী হতে পারেন।
স্যামসাং ৪ গিগাবাইট মোবাইল র্যাম
এতদিন
পর্যন্ত স্মার্টফোনের র্যাম ২ গিগাবাইট পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। কেবল
গ্যালাক্সি নোট থ্রিতে ছিল ৩ গিগাবাইট র্যাম। তবে স্যামসাং এই
সীমাবদ্ধতাকে কাটিয়ে মোবাইল ডিভাইসের জন্য ৪ গিগাবাইট র্যাম তৈরি করেছে।
এটি এলপিডিডিআর৪ মোবাইল ডি-র্যাম। স্মার্টফোনের কাজকে গতিশীল করা,
অ্যাপ্লিকেশনগুলোকে আরও মসৃণভাবে পরিচালনা করা কিংবা মাল্টিটাস্কিংয়ের
ক্ষেত্রে এই র্যাম নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করবে। তবে কাজের ক্ষেত্রে যোজন
যোজন এগিয়ে থাকলেও এতে শক্তি খরচ অনেক থাকবে বলে জানিয়েছে স্যামসাং।
কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮০৫
স্মার্টফোন
চিপ নির্মাতা হিসেবে কোয়ালকম প্রযুক্তি বিশ্বে একটি নির্ভরযোগ্য নাম।
তাদের নতুন চমক হিসেবে এ বছরেই বাজারে আসার কথা রয়েছে স্ন্যাপড্রাগন ৮০৫
প্রসেসরের। ক্রেইট ৪৫০ কোয়াড-কোর সিপিইউ-এর উপর তৈরি এই প্রসেসরের ক্লক
স্পিড প্রতিটি কোরে ২.৫ গিগাহার্জ। এই চিপে আরও রয়েছে অ্যাড্রেনো ৪২০
জিপিইউ। ফলে এর গ্রাফিক্স ক্ষমতা আগের প্রসেসরগুলোর তুলনায় ৪০ শতাংশ
পর্যন্ত বেশি হবে, যা ৪কে মানের কনটেন্টও সমর্থন করবে। ফলে হাই-এন্ড
স্মার্টফোন কম্পিউটিংয়ের জন্য স্ন্যাপড্রাগন ৮০৫ প্রসেসর হতে পারে
স্মার্টফোন নির্মাতাদের অন্যতম ভরসা।
এনভিডিও টেগরা কে১
গ্রাফিক্স
কার্ডের জন্য এনভিডিয়া বিখ্যাত হলেও মোবাইল প্রসেসরের বাজারে টেগরা সিরিজ
দিয়ে শক্তিশালী অবস্থানেই রয়েছে এনভিডিয়া। স্মার্টফোন প্রসেসরে এ বছরে
তাদের আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে টেগরা কে১ প্রসেসর। ৩২-বিট এবং ৬৪-বিট সংস্করণে
এই প্রসেসর তৈরি করছে এনভিডিয়া। এই প্রসেসরের ব্যবহার বিশেষ করে
স্মার্টফোন গেমিংয়ে দেবে নতুন গতি। এক্সবক্স ৩৬০ বা প্লে-স্টেশন ৩কেও
গতিতে ছাড়িয়ে যাবে এই চিপের স্মার্টফোন—এমনটিই জানিয়েছে এনভিডিয়া।
এলজি নমনীয় ব্যাটারি
নমনীয়
বা বাঁকানো স্মার্টফোন নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। এর মধ্যে
বাঁকানো ডিসপ্লের স্মার্টফোন বাজারে এলেও নমনীয় স্মার্টফোনের দেখা
মেলেনি। আর এটি তৈরিতে প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো নমনীয় ব্যাটারি না থাকা।
তবে নমনীয় এবং বাঁকানো একটি ব্যাটারি সফলভাবে তৈরির ঘোষণা দিয়েছে এলজি।
এলজি'র 'চেম' ইউনিট তৈরি করেছে এই ব্যাটারি যা যেকোনো ধরনের মোবাইল
ডিভাইস ব্যবহার করা যায়। এমনকি ওয়্যারেবল পিসির যে ধারণাগুলো নিয়ে কাজ
চলছে, সেগুলোতেও ব্যবহার করা যাবে এই ব্যাটারি। ফলে একে নিয়ে আশাবাদীই হয়ে
উঠেছে প্রযুক্তি বিশ্ব।
আশা করা হচ্ছে এই উদ্ভাবনগুলো হাজির হবে এ বছরেরই বিভিন্ন সময়ে। ফলে স্মার্টফোনপ্রেমীরা আগ্রহে অপেক্ষা করতে পারেন এ বছর।
Comments